মাদকাসক্তি মুক্ত যুবসমাজ ও আমাদের উন্নয়ন রচনা

আজকে আমাদের ওয়েবসাইটে এই অংশে আপনি জানতে পারবেন।মাদকাশক্তি মুক্ত যুবসমাজ ও আমাদের উন্নয়ন রচনা সম্পর্কে।
মাদকাশক্তি মুক্ত যুবসমাজ ও আমাদের উন্নয়ন রচনা
এবং মাদকাশক্তি মুক্ত যুবসমাজ ও আমাদের উন্নয়ন রচনা এর পাশাপাশি নিচে আপনার প্রয়োজনীয় প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। বিস্তারিত জানতে পুরো পোস্টটি ভালো করে পড়ুন।

মানব সভ্যতা যখন বিস্ময়কর সম্ভাবনা দিয়ে নতুন শতাব্দী’তে এসে দারিয়েছে। তখন আমাদের দেশে তরুণ প্রজন্মের উল্লেখযোগ্য অংশ আক্রান্ত এক সর্বনাশরা মরণ নেশায় আর সে নেশা হলো মাদক।

ভূমিক
এক বড় ষড়যন্ত্রের শিকার আমাদের দেশের তরুণ সমাজ। যে তরুণ এর ঐতিহ্য আছে সংগামের, প্রতিবাদের, যুদ্ধ জয়ের, তাদের সেই ঐতিহ্যকে ধর্বংস করে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে আন্তজার্তিক মাফিয়া চক্র। তাদের ভবিষ্যৎ কে অসাড়, পঙ্গু ও ধর্বংস করে দেওয়ার জন্য চলছে এক ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা।

জাতির মেরুদন্ড কে ভেঙ্গে দেওয়ার জন্যে দেশের তরুণ সমাজকে নেমার দিকে টেনে নিচ্ছে। যার জন্য মাদম নেশার ফাদে পড়ছে হাজারো সম্ভাবনাময় প্রাণ। মাদকের জাল থেকে বেরিয়ে আসার জন্য মনোবল হারিয়ে ফেলছে অসংখ্য তরুন সমাজ।

মাদকাশক্তি কি?
মাদকাশক্তি হলো একটি স্নায়বিক ক্রিয়া। যার প্রভাবে মানুষের চিন্তা চেতনা এবং আচার আচরণে অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। মাদকদ্রব্যের প্রতি আসক্তি যুব সমাজ এর এক আদিম প্রবণতা। শাব্দিক অর্থে মাদকাশক্তি বলতে বুঝায় ড্রাগ কিংবা মাদকদ্রব্যের প্রতি এক প্রবল আকর্ষণ কে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে নেশা এমন একটি মানসিক বা শারীরিক অবস্থা। যার সৃষ্টি হয়েছে জীবিত প্রাণী এবং মাদক ওষুধে এর মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যম-এ।

মাদকাসক্তির কারণ
মাদকাসক্তির বড় কারণ মাদকের সহজলভ্যতা। মাদকের প্রতি তরুণ প্রজন্মের কৌতূহল ও নিছক মজা করার প্রবণতা, মাদকের কুফল সম্পর্কে প্রকৃত ধারণার অভাব, পরিবার এর ধরন, পিতা-মাতার আচরণ ও দৃ্ষ্টিভঙ্গি। বন্ধু-বান্ধবদের চাপ প্রভৃতি।

মানসিক সমস্যার কারণে অনেকে মাদকাশক্ত হয়। পারিপার্শ্বিক কারণে অনে সময় মাদক গ্রহণ করে থাকে। আবার অনেকে বেকারত্ব, সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়া, ব্যবসায় লস, পরীক্ষায় ফেল ইত্যাদি কারণে মাদকের আশ্রয় গ্রহণ করে তরুণ-তরুণীরা। তারা মাদকের খপ্পড়ে পড়ে নিজের জীবনের বিপর্যয় ডেকে নিয়ে আসে।

মাদকদ্রব্যর প্রকারভেদ
বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরণের মাদকদ্রব্য ব্যবহৃত হয়। প্রাচীনকাল এর মাদকদ্রব্যের ভেতর আছে- মদ, গাজা, ভাং আরো ইত্যাদি। বর্তমানে আরো অসংখ্য নিত্য-নতুন মাদকদ্রব্য আবিষ্কৃত হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযেগ্য- হেরোইন, ইয়াবা, কোকেন, পপি ইত্যাদি।

মাদকাসক্তির লক্ষণ
মাদক গ্রহণকারীর চিন্তা ও আচরণে পরিবর্তন আসেমাদক সেবনকারীর চিন্তা ভাবনা হয়ে ‍উঠে বিক্ষিপ্ত কোনো কিছুতে বেশিক্ষণ মন বসাতে পারে না। মেজাজ থাকে খিটখিটে। ঘুমের সমস্যা দেওয়া যায়, খাওয়া দাওয়া অনিয়ম দেখা যায়, বাসায় ঠিকমতো খায় না। গভীর রাত পর্যন্ত বাইরে থাকে। কারণে অকারণে মিথ্যা কথা বলে, প্রয়োজনে – অপ্রয়োজনে বাবা মায়ের কাছে টাকা চায়, টাকা না পেলে নিজের শরীরে আঘাত করে। অযথায় রাগারাগি করে, পড়ালেখায় মান কমে যায়, আত্মবিশ্বাস কমে যায়, বাথরুমে বেশি সময় কাটায় ইত্যাদি।
উপরে উল্লিখিত সকল লক্ষণ একসঙ্গে যেমন সব মাদকাসক্তের মধ্যে থাকে না। তেমনি উপরের লক্ষণ গুলোও ভিন্ন কারণেও হতে পারে। তাই নিছক সন্দেহের বশে কাউকে মাদকাশক্ত হিসেবে চিহ্নিত না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মাদকাসক্তি নির্ণয় করা প্রয়োজন।

মাদকাশক্তি মুক্ত যুবসমাজ ও আমাদের উন্নয়ন
মাদকের ছোবলে গোটা দেশ আজ আক্রান্ত। মহামারীর মতোই তা যুবসমাজকে অবিরত গ্রাস করে চলেছে। মাদকাশক্তির ভয়াবহ পরিণতি দেখে আজ প্রশাসন, অভিভাবক, চিকিৎসক, সুধী সমাজ আতঙ্কিত। 1986 সালে মাদকাসক্তি বিষয়ক এক দলিলে এই অভিমত প্রকাশ করা হয়েছে- বিশ্বব্যাপী মাদকের প্রভাব থেকে মানুষকে মুক্ত করার সহজ সাধ্য বিষয় নয়। তাহলে কি মানুষ পৃথিবীতে মাদক নেশার হাত থেকে বাচতে পারবে না?

সৃষ্টির সেরা জীব মানুষটি এই সর্বনাশা নেশার কবলে ক্রমে নিঃশেষ হয়ে যাবে? এই প্রশ্ন সামনে রেখেই বিশ্বব্যাপী বিবেকবান মানুষ মাদকবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিচ্ছে। দেশে দেশে মাদক বিরোধী সংস্থাও গড়ে তোলার কাজে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে আমাদের দেশও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে শুরু হচ্ছে আন্দোলন। নেশাগ্রস্তদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাই কিশোর যুব পৌঢ় নির্বিশেষে সকলের ওপরই আজ কঠোর দায়িত্ব। এ জন্য পাড়ায় পাড়ায় গড়ে তুলতে হবে প্রতিরোধ ব্যবস্থা। আজ সবাই শামিলহতে হবে এ নেশার বিরুদ্ধে। এ সমস্যার প্রতিকার নিম্নলিখিত ভাবে করা যেতে পারে-

  • পরিবারকে অবশ্যই তাদের সন্তানের প্রতি সচেতন হতে হবে।
  • মাদকদ্রব্য চোরাচালান বিরোধী কর্মসূচি জোরদার করতে হবে।
  • বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
  • মানবিক মূল্যবোধ সক্রিয় ও জাগ্রত করতে হবে।
  • ধর্মীয় মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে হবে।
  • পিতা-মাতা কর্তৃক সন্তানদের তত্ত্বাবধান বাড়াতে হবে।
  • কর্মমুখী শিক্ষার মাধ্যমে যুবকদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে।
  • মাদকাশক্ত ও খারাপ সঙ্গ থেকে সন্তানদের দূরে রাখতে হবে।
  • মাদকদ্রব্য ও মাদকাসক্তদের ভয়াবহ অবস্থার কথা বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে ও সংবাদপত্রে নিয়মিত ভাবে প্রচার করতে হবে।
  • মাদক ব্যবসা ও চোরাচালানের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
উপসংহারঃ
যুব সমাজই দেশের ভবিষ্যৎ। তারা মাদকশক্ত হয়ে পঙ্গু হওয়ার অর্থ দেশ পঙ্গু হয়ে যাওয়া।সুস্থ-সবল মানুষই পারে দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে। এ বাস্তব সত্যকে স্বীকার করে নিয়ে নেশার রাহু গ্রাস থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষার দায়িত্ব কেবল সরকারের নয়- দেশের প্রতিটি নাগরিকের।

FAQ :
01. মাদকাশক্তি কি?
উত্তরঃ মাদকাশক্তি হলো- বিভিন্ন নেমার দ্রব্য সেবন করে নেশা করার প্রবণতাই হচ্ছে মাদকাশক্তি।
02. মাদকাশক্তির ক্ষতির দিক?
উত্তরঃ মাদকা সেবনে মানবদেহের মাংসপেশির কম্পন ও মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।
03. মাদকাশক্তি হালাল না হারাম?
উত্তরঃ হারাম।
04. মাদক সেবনে শারীরিকভাবে কি কি সমস্যা হয়?
উত্তরঃ মস্তিস্কের সমস্যা, যৌন সমস্যা, স্মৃতিশক্তি নষ্ট, ঘুমের সমস্যা, কিডনি ও লিভার সমস্যা ইত্যাদি।
05. ইয়াবা বড়ি খেলে কি কি ক্ষতি হয়?
উত্তরঃ ইয়াবা খেলে উচ্চ রক্তচাপ হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন