হাটুর জয়েন্টে ব্যথা ঔষধের নাম - হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায়

আপনি যদি আমাদের ওয়েবসাইটে হাঁটুর জয়েন্টে ব্যথার ওষুধ কিংবা হাঁটু ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের আজকের এই ওয়েবসাইটটি আপনার জন্য।
হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায়
আজকে আমাদের ওয়েবসাইটে হাঁটু জয়েন্টে ব্যথা ওষুধের নাম হাঁটু ব্যথা সংক্রান্ত সকল প্রশ্নের উত্তর এবং তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করা হয়েছে।

হাটুর জয়েন্টে ব্যথা ঔষধের নাম

আমাদের দেশে বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে হাঁটুর জয়েন্টের ব্যথা খুবই প্রচলিত একটি সমস্যা। নানা কারণে এ ধরনের ব্যথা হয়ে থাকে। হাঁটুর জয়েন্টের ব্যথা এবং এর প্রতিকার নিয়ে বিস্তারিত জানাশোনাসহ সচেতন থাকা একান্ত কর্তব্য। কেননা দেখা যায় জানাশোনা না থাকার কারণে অনেকে ভুল ঔষধ সেবন করে, এবং নিজের ব্যাপক ক্ষতি করে থাকে।

সেজন্য আমরা কিছু হাটুর জয়েন্টে ব্যথার ঔষধের নাম বলছি যেগুলো জেনে রাখলে আপনাদের জন্য খুবই উপকারী হবে। হাঁটুর জয়েন্টে ব্যথার জন্য বর্তমানে বাজারে অনেক ধরনের ওষুধ রয়েছে। এক ধরনের ওষুধ রয়েছে যা আপনার ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। অন্য আরেক ধরনের ওষুধ রয়েছে যা আপনার হারের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করবে। চলুন ওষুধগুলোর নাম জেনে নেয়া যাক-

ডেক্সামেথাসেন (Dexamethasone) ইঞ্জেকশন

ডেক্সামেথাসেন (Dexamethasone) একটি ব্যথানাশক ইঞ্জেকশন। আমাদের বাজারে এই ইনজেকশনগুলি সাধারণত প্রতি ইনজেকশনে ১৫০-২০০ টাকায় পাওয়া যায়। অবশ্যই এটি পেশাদার চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে সেবন করতে হবে।নয়তো আপনার শরীর অতিরিক্ত দূর্বল হলে পেটে ব্যথা, অতিরিক্ত ঘুম, বমি ও ডায়রিয়া হতে পারে।

ফোসাম্যাক্স (Fosamax) ইঞ্জেকশন
ডেক্সামেথাসেন এর মতো ফোসাম্যাক্সও (Fosamax) একটি ব্যাথানাশক ইঞ্জেকশন। আমাদের বাজারে এই ইঞ্জেকশনগুলি ৭০০০-১০,০০০ টাকার ভেতরে পাওয়া যায়। এটি পেশাদার চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে সেবন করতে হবে। তাহলে আপনার শরীরে কোনোরূপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যাবেনা।

জয়নিক্স প্লাস ট্যাবলেট
ঔষধের নাম হলো জয়নিক্স প্লাস। এটি ইনসেপ্টা ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড কোম্পানির ট্যাবলেট। বাত ও খেলাধুলার কারণে হাঁটুর জয়েন্টে ব্যথা হলে এটি সেবন করতে পারেন।

মনে রাখবেন এই ঔষধটি শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য। এক থেকে দুইটি ট্যাবলেট দিনে তিনবার গ্রহণ করতে হয়। তবে পেশাদার চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেবন করা ঠিক হবেনা। খাওয়ার পর ভরা পেটে সেবন করতে হবে।

জয়নিক্স প্লাস এর মূল্য ৮ টাকা এবং প্রতি পাতা ট্যাবলেট  ৮০ টাকা।

ডিক্লোমল ট্যাবলেট
পরবর্তী ঔষধের নাম হলো ডিক্লোমল ট্যাবলেট। এটি অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ব্যথানাশক ওষুধ। বাতজনিত লক্ষণ যেমন প্রদাহ, ব্যথা, জ্বর এবং গাঁট বা জয়েন্টের ফোলাভাব উপশম করতে ব্যবহৃত হয়। ওষুধটি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অস্টিওআর্থ্রা‌ইটিস, অ্যাঙ্কাইলুজিং স্পন্ডিলাইসিস এবং মারাত্মক মাসিকের ব্যথার চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত হয়। ঔষধটি খাওয়ার পর ভরা পেটে সেবন করতে হবে।

তবে আপনার শরীর অতিরিক্ত দূর্বল হথাকলে এই ঔষধ সেবনে ডায়রিয়া, বমির মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাই পেশাদার চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধটি সেবন করা ঠিক হবেনা।

প্রতি পিস ডিক্লোমল ট্যাবলেট এর মূল্য ৪ টাকা এবং প্রতি পাতা ট্যাবলেট এর মূল্য ৪০ টাকা।

কার্টিকেয়ার ম্যাক্স ট্যাবলেট
পরবর্তী ঔষধের নাম কার্টিকেয়ার ম্যাক্স ট্যাবলেট। এটি রেডিয়েন্ট ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড কোম্পানি একটি ওষুধ। ওষুধটি প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য শুধু। ১৮ বছরের নিচে কেউ এটি সেবন করতে পারবে না। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের জন্যও ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত এই ওষুধ সেবন করা ঠিক হবেনা।

হাঁটুর জয়েন্টে ব্যথা থাকলে কার্টিকেয়ার ম্যাক্স ট্যাবলেট একটি করে প্রতিদিন দুইবার সেবন করতে হবে। সকালে এবং রাতে খাবারের সাথে ওষুধটি সেবন করতে হবে।

কার্টিকেয়ার ম্যাক্স প্রতি পিস ট্যাবলেটের মূল্য ২২ টাকা।

ক্যালবো ডি ট্যাবলেট
পরবর্তী ঔষধের নাম ক্যালবো ডি ট্যাবলেট। এটি স্কয়ার কোম্পানীর একটি ঔষুধ। এই ঔষধ আপনার ক্যালসিয়াম হাড়ের শক্তি বাড়াতে অবদান রাখে, এবং আপনার শরীরের হাড়কে শক্ত করে হাড়ের ক্ষয়রোধে সাহায্য করে। এটি প্রতিদিন দুইবার খাওয়ার পরে সেবন করতে হবে। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ পেলেই সেবন করবেন,তার আগে নয়।

ক্যালবো ডি প্রতি পিস ট্যাবলেটের মূল্য ৫ টাকা।

হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায়

হাটু ব্যাথা কমাতে ১০ টি উপায় দেয়া হলো যেগুলো আপনার হাটু ব্যথা কমাতে সহায়তা করবে উপায় গুলো দেখতে পোষ্টের এই অংশটুকু পড়ুন।

ওজন ব্যবস্থাপনা: হাঁটু জয়েন্টগুলোতে চাপ কমাতে একটি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন, কারণ অতিরিক্ত ওজন হাঁটু ব্যথা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

নিয়মিত ব্যায়াম: কম-প্রভাব ব্যায়ামে নিযুক্ত হন যা হাঁটুকে সমর্থনকারী পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে, যেমন সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো বা মৃদু স্ট্রেচিং ব্যায়াম। উপযুক্ত ব্যায়ামের জন্য একজন স্বাস্থ্যসেবা পেশাদার বা শারীরিক থেরাপিস্টের সাথে পরামর্শ করুন।

ঠান্ডা থেরাপি: ফোলা কমাতে বড় ব্যাথা পেতে জায়গায় ৫ থেকে ১০ মিনিট ভালোভাবে প্রয়োগ করুন কিংবা ব্যবহার করুন

বিশ্রাম: আপনার ফোলা পাখি যথেষ্ট পরিমাণ বিশ্রাম দেয়া উচিত কারণ পায়ের ওপর চাপ পড়লে ফলে আপনার হাটুর আরও প্রবলেম হতে পারে।

পাদুকা: হাঁটুতে কমাতে ভালো ধরনের জুতা পড়ুন আরামদায়ক।

খাদ্যতালিকা পরিবর্তন: ফল, শাকসবজি, ওমেগা -3 ফ্যাটি অ্যাসিড (মাছ, ফ্ল্যাক্সসিড এবং চিয়া বীজে পাওয়া যায়) সমৃদ্ধ একটি প্রদাহ-বিরোধী খাদ্য গ্রহণ করুন এবং হলুদের মতো মশলা, যা এর প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত।

সাময়িক সময়ের প্রতিকার: হাঁটুর ব্যথা প্রতিকার পেতে মেন্থল এবং কিছু সাধারণ ক্রিম প্রয়োগ করে এবং মলম প্রয়োগ করে আপনার সাময়িক সময়ের জন্য হাঁটুর ব্যথা প্রতিকার পেতে পারেন

ব্যায়াম: রেগুলার যদি ব্যায়াম করেন এবং ভারসাম্য বজায় রাখলে শক্তি উন্নত করতে পারে এবং হাঁটু ব্যথা কিছুটা কমে যেতে পারে।

নতুন ব্যায়াম বা চিকিৎসা চেষ্টা করার আগে সর্বদা একজন পেশাদার ডাক্তার বা একজন শারীরিক থেরাপিস্টের সাথে পরামর্শ করুন, বিশেষ করে যদি আপনার হাঁটুতে ব্যথার জন্য অন্তর্নিহিত অবস্থা থাকে। এই প্রাকৃতিক প্রতিকারগুলি চিকিৎসা পরামর্শের পরিপূরক হতে পারে কিন্তু সমস্ত ব্যক্তি বা অবস্থার জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে।

হাঁটুর জয়েন্টে ব্যথা কেন হয়

হাঁটু আমাদের শরীরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি জয়েন্ট যেটি ওজন বহন করে থাকে। নারীদের সবচেয়ে বেশি হয়। এটা যে কোন বয়স ও যেকোনো কারণে হতে পারে। চলুন হাঁটুর জয়েন্টের ব্যথাগুলোর কারণ উদঘাটন করা যাক।

উপরে একবার বলেছি বিভিন্ন কারণে হাঁটুর জয়েন্টে ব্যথা হয়। বিভিন্ন ভিটামিন বা খনিজের ঘাটতির জন্য হাঁটুর ব্যথা হয়। অন্যদিকে ওজন বেশি থাকা ও দুটি হাড়ের মাঝে থাকা জেলির মত পদার্থ কমে যাওয়ার কারণেও কিন্তু হাঁটু ব্যথা হয়। অন্যদিকে হতে পারে আপনার হাঁটুর জয়েন্টে কিছু ইনফেকশন হয়েছে যার কারণে আপনার হাঁটু ব্যথা করছে।

এছাড়াও আঘাতজনিত ব্যথা খেলাধুলার ইনজুরি বা কোনো দুর্ঘটনায় লিগামেন্টের আঘাত থেকে হাঁটু বা জয়েন্টে ব্যথা হতে থাকে।

আবার হাঁটুর জয়েন্টের চারপাশে কারটিলিস নামের যে নরম হাড় থাকে, সেখানে ক্ষয় দেখা দিলে হাঁটুর ব্যথা হয়। এটি সাধারণত বয়সজনিত কারণে বেশি হয়। একে অস্টিওআরথ্রাইটিসও বলা হয়। রিউমাটিজম আরথ্রাইটিস বা বাতের কারণেও ব্যথা হয়ে থাকে।

এগুলো সমস্যায় হাটু ব্যাথার পাশাপাশি একটু ফলাও থাকতে পারে এবং ভাজ করতে একটু সমস্যা হতে পারে হাঁটুর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে যাবে, হাঁটুর আকৃতির পরিবর্তন হতে পারে হাটু ভাঁজ করতে গেলে  শব্দ হবে।

আবার ইনফেকশনজনিত বা টিউমারের কারণেও হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে। ইনফেকশনের জন্য সেপটিক আরথ্রাইটিস যেকোনো বয়সের মানুষেরই হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দ্রুত ডায়াগনোসিস করে রোগীকে ব্যথার ওষুধ, অ্যান্টিবায়োটিক, জয়েন্টে সাপোর্ট দেওয়া হয়।

হাঁটু ব্যাথার ট্যাবলেট এর নাম

অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করার মাধ্যমে হাঁটুর ব্যথা নিরাময় করাটা এখন বহুল প্রচলিত উপায়। আপনাদের সুবিধার কথা ভেবে হাঁটু ব্যথার জন্য আরও কিছু এন্টিবায়োটিক ওষুধের নাম বলে দিচ্ছি । যে ওষুধগুলো সময় মেনে সেবন করলে আপনি অতি তাড়াতাড়ি হাঁটুর ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পাবেন। তবে অবশ্যই অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ঔষধগুলো সেবন করবেন না।

আরও কিছু উল্লেখযোগ্য ট্যাবলেটগুলো হলো
  • এপ্রোসিন
  • ক্লোফেনাক
  • Neso Tablet
  • Acical - D Tablet
  • ন্যাপ্রোসিন
  • এক্সিয়াম
  • Ultram
উপসংহার

আমাদের দেয়া তথ্য গ্রহণ করলে আপনার অনেকটা উপকারে আসবে। কিন্তু মনে রাখবেন, যদি দীর্ঘদিন ধরে হাঁটুর ব্যথা থাকলে অবশ্যই পেশাদার ডাক্তারের সরনাপন্ন হবেন।

অন্যথায় আপনার বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। যেমন দেখা যাবে আপনি আর হাঁটতে পারছেন না। আপইনার হাঁটুর জয়েন্টে পানিও জমে যেতে পারে। এখানে হাঁটুর জয়েন্টে ব্যথা ওষুধের নাম ও ঘরোয়া উপায় আপনাদের জানিয়েছি। হাটুর ব্যথার ওষুধ কেনার সময়, অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এর অন্যথায় করবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন