লক্ষী পূজার নিয়ম - লক্ষী পূজা ২০২৪

লক্ষী দেবী ধন সম্পদ এবং ভাগ্য পরিবর্তনের দেবী। লক্ষী দেবীর পূজা করলে দেবী সন্তুষ্ট হয়ে ভক্তদের ধন সম্পদ দান করেন। ভক্তি সহকারে দেবী লক্ষীর পূজা করলে দেবী লক্ষী কোনো ভক্তকে ফিরিয়ে দেন না। সবার আশা আকাক্ষা পূরণ করেন।
লক্ষী পূজার নিয়ম
তাই প্রত্যেক বাঙালিই আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের তিথিতে শ্রী শ্রী লক্ষী দেবীর পূজা করে থাকেন। আজকে আপনাদেরকে এই লক্ষী পূজার নিয়ম , পাঁচালি এবং লক্ষী পূজার আরো অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা করবো। তাই শেষ পৰ্যন্ত আমাদের কনটেন্টটি পড়ুন।

লক্ষী পূজার নিয়ম - লক্ষী পূজা ২০২৪

আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে প্রত্যেক ঘরে ঘরে ধন-সম্পদের দেবী লক্ষ্মীর পুজো করা হয়ে থাকে। চুলুন আজকে দেখে নেয়া যাক কিভাবে লক্ষী দেবীর পূজা করা হয়। লক্ষী দেবীর পূজার বিধি নিয়ম :
  • প্রথমে চারিদিকে পূজা জায়গায় গঙ্গা জল ছিটিয়ে দিতে হবে।
  • তার পর নারায়ণকে স্মরণ করে পূজা শুরু করতে হবে ।
  • পূজার সামনে ঘট বসাতে হবে ,এবার ঘটের সামনে ধান ছিটিয়ে দিতে হবে।
  • ঘটে সিঁদুর দিয়ে একটি স্বস্তিক চিহ্ন আঁকতে হবে।
  • এবার ঘটে গঙ্গা জল ভরে তার ওপর ৫ পাতার আম্রপল্লব রাখুন। আম পাতার ওপর তেল ও সিঁদুর দিয়ে প্রত্যেক পাতায় ফোঁটা দেবেন। পাতার ওপর হরিতকী, ফুল, দূর্বা রাখুন।
  • এর পর লক্ষ্মী দেবীর পা ধুয়ে দিতে হবে। লক্ষ্মীর পায়ে আলপনা দিয়ে আকঁতে হবে।
  • এবার ঘটে আতপ চাল, দূর্বা, ফুল ও চন্দন দিন। তার পর এক এক করে সব কিছু লক্ষ্মীকে অর্পণ করুন।
  • ফল, মিষ্টি ইত্যাদি নৈবেদ্য দিন। ধূপ ধুনো দেখান।
  • অর্পণ করার পর এবার পুষ্পাঞ্জলি দিতে হবে।
  • তার পর লক্ষ্মীর বাহনকে ফুল দিন এবং নারায়নকে স্মরণ করে ঘটে ফুল দিতে হবে। এবার ইন্দ্র ও কুবেরকে স্মরণ করে ঘটে ফুল দিন। তারপর লক্ষ্মীকে প্রণাম করুন।
  • সবশেষে লক্ষ্মী পাঁচালী পড়ে পুজো সম্পন্ন করুন।

শুভ লক্ষী পূজার শুভেচ্ছা - লক্ষী পূজা পদ্ধতি

লক্ষী পূজা প্রত্যেক হিন্দুদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পূজা। এই পূজার মাধ্যমে ঘরে ভাগ্য ফিরে আসে। তাই এই পূজা সবাই করে থাকে। আজকে দেখে নেয়া যাক লক্ষী পূজা করার পদ্ধতি :

লক্ষ্মীপূজায় কাঁসা ,ঘণ্টা বাঁজাতে নেই,শুধু উলুধ্বনি দেয়া যাবে । লক্ষ্মীকে তুলসীপাতা দিয়ে পূজা করা যাবে না। কিন্তু লক্ষ্মীপূজার পর নারায়ণ পূজা করার সময় অবশ্যই নারায়ণকে একটি ফুল এবং তুলসী দিয়ে পূজা করতে হবে।লক্ষ্মীপূজা সাধারণত সন্ধ্যাবেলা বা গোধূলি লগ্নে করতে হবে, তবে অনেকে সকালেও করে থাকেন। সকালে করলে সকাল ন-টার মধ্যে করে নেওয়াই ভাল। পূজার পর পাঁচালি পাঠ করতে হয়। লক্ষ্মীপূজায় লোহা বা স্টিলের বাসন-কোসন ব্যবহার না করায় উত্তম ।

লোহা দিয়ে অলক্ষ্মীর পূজা হয়। তাই লোহা দেখলে লক্ষ্মী সে গৃহ ত্যাগ করে চলে যান। যারা যে প্রতিমায় পূজা করার নিয়ম সে সেই নিয়মেই পূজা করতে পারবে । পূজার পূর্বে পূজাস্থান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে ধূপ দীপ জ্বালিয়ে দেবে। পূজাস্থানে লক্ষ্মীর পা-সহ আলপনা আঁকবে। ঘটের পাশে একটি লক্ষ্মীর পা অবশ্যই আঁকবে। পূজার সময় অন্য মনস্ক হওয়া যাবে না। মনকে লক্ষ্মীতে স্থির রাখবে।

কোজাগরী লক্ষী পূজার পাঁচালী

ধনসম্পদ, আধ্যাত্মিক সম্পদ, ভাগ্য ও সৌন্দর্যের দেবী মা লক্ষ্মীর আরাধনা আমাদের বাস্তব জীবনে মঙ্গল বয়ে আনে ,আর এই আরাধনা অসম্পূর্ণ থেকে যায় ব্রতকথা ও পাঁচালি পাঠ ছাড়া। কোজাগরি লক্ষ্মী পুজোর দিন বাংলার ঘরে ঘরে শ্রী শ্রী মা লক্ষ্মীর পাঁচালি পাঠের প্রথা প্রাচীনকালে শুরু হলেও আজও সেই প্রথা চলমান রয়েছে। গৃহলক্ষ্মীরা লক্ষ্মীর ব্রতকথা ও পাঁচালি নিষ্ঠাভরে ও একাগ্রচিত্তে পাঠ করলে মা লক্ষ্মী সন্তুষ্ট হন।

দোল পূর্ণিমার নিশি নির্মল আকাশ । ধীরে ধীরে বহিতেছে মলয় বাতাস ।।
বৈকুণ্ঠেতে একাসনে লক্ষ্মী নারায়ণ । করিতেছে কত কথা সুখে আলাপন ।।
সৃষ্টিতত্ত্ব, জ্ঞানতত্ত্ব কত কথা হয় । শুনিয়া পুলকিত হয় দেবীর হৃদয় ।।
অকস্মাৎ দেবর্ষি নারায়ণ স্বরে । আসিলেন ভক্তি চিত্তে বৈকুণ্ঠ নগরে ।।
প্রণাম করি দেবর্ষি বলেন বচন । মর্ত্যে দুর্ভিক্ষ মাগো কী ভীষণ ।।
ঋষি বলে মা তুমি চঞ্চলা মন । সর্বদা ঘোরো ভবন হতে ভবন ।।
মর্ত্যবাসী তাই দেখ কষ্ট কত পায় । দেখি তাহা কেমনে মম প্রাণে সয় ।।
অন্নাভাবে লোকে কত কষ্ট ভোগে । মরিতেছে অনাহারে কৃশকায় রোগে ।।
ধর্মাধর্ম লোকে সবে ত্যাগ করি দেয় । স্ত্রী কন্যা বিক্রি করে ক্ষুধার জ্বালায় ।।
দুর্ভিক্ষে হইলো শেষ মরে জীবগন । দয়া করে মাগো তুমি করো নিবারন ।।
এই দুর্দশা দেখি প্রাণে নাহি সয় । করো নিবারণ মাগো হইয়া সদয় ।।
নারদের বাক্য শুনি কহেন হরিপ্রিয়া । বিশ্বমাতা আমি দেবী বিষ্ণুজায়া ।।
যে যেমন কর্ম করে সে তেমন পায় । সে দোষে কর্মফল, করে হায় হায় ।।
মহামায়ার স্বরূপে নারী সত্যবচন । যে মর্ত্যবাসী না মানে এই কথন ।।
সদাচার কুল শীল দিয়া করে বিসর্জন । ঘরের লক্ষ্মীকে করে সদা বর্জন ।।
এমন মনুষ্যজাতি মহাপাপ করে । কর্ম দোষে লক্ষ্মী ত্যাজে তাহারে ।।
নারীর পরম গতি স্বামী ভিন্ন কেবা । ভুলেও না করে নারী পতি পদসেবা ।।
যথায় স্বেচ্ছায় ঘুরিয়া বেড়ায় । গুরুজনে নানা কটুবাক্য শোনায় ।।
সর্বদা হিংসা করে না মানে আচার । হিংসাতে তার মজে সংসার ।।
ছড়া নাহি দেয় তার, প্রভাতকালে । লক্ষ্মী সে স্থান ছাড়িয়া চলে ।।
অতিথি যদি উপস্থিত হয় দ্বারে দ্বারে। দূর দূর করি তারায় তাহারে ।।
যেবা গুরু, ব্রাহ্মণ দেখি ভক্তি নাহি করে। মম নিবাস কভু নহে সেই ঘরে ।।
এঁয়োতির চিহ্ন সিঁদুর শাঁখা না দেয় । বাসি কাপড়ে যথা তথা বেড়ায় ।।
নিত্য স্নান নাহি করে যে মনুষ্য গণ । ত্যাজিয়া তাহারে, করি অন্যত্র গমন ।।
তিথি ভেদে যেবা নিষিদ্ধ দ্রব্য খায় । হই না কভু তার ওপর সহায় ।।
যে মনুষ্য ভক্তিভাবে একদশী না করে । কদাপি নাহি থাকি তাহার ঘরে ।।
উচ্চহাসি হাসিয়া যে নারী ঘোরে । গুরুজন দেখি ঘোমটা না টানে ।।
বয়োজ্যেষ্ঠ দেখি যারা প্রণাম না করে । সন্ধ্যাকালে ধূপ দীপ নাহি দেয় ঘরে ।।
ঠাকুর দেবতা আদি কভু নাহি পূজে । সাধু সন্ন্যাসী দেখি হাসাহাসি করে ।।
এমন নারী যে গৃহেতে বসতি রয় । লক্ষ্মী দেবী ত্যাজে তাহাকে জানিবে নিশ্চয় ।।
এত বলি লক্ষ্মী দেবী বলেন মুনিকে । কর্মদোষে মনুষ্য নিজ ফল ভোগে ।।
ঋষি বলে মাগো তুমি জগতজননী । সন্তান কে করো ক্ষমা হে সনাতনী ।।
দূর করি দাও মা ভীষণ মহামার । বর দিয়ে জীবেরে করহ নিস্তার ।।
এই বলি বিদায় হইলেন মহামুনি । চিন্তিত হইয়া কহেন নারায়ণী ।।
কহ কহ কৃপাময় প্রভু নারায়ণ । কিরূপে নিষ্কৃতি পাইবে জীবগণ ।।
লক্ষ্মীদেবীর কথা শুনি কহেন জনার্দন । শুন দেবী মন দিয়া আমার বচন ।।
তুমি যে পরমা প্রকৃতি দেবী ভগবতী । তোমার কৃপায় দূর হইবে অনাসৃষ্টি ।।
যে জন গুরুবারে লক্ষ্মী ব্রত করে । সুখে জীবন কাটাইবে তোমার বরে ।।
লক্ষ্মী কভু নাহি ছাড়িবে তাহারে । জীবনান্তে আসিবে সে বৈকুণ্ঠ নগরে ।।
মর্ত্যে গিয়া কর এই ব্রতের প্রচার । তোমার কৃপায় দূর হইবে অনাচার ।।
গমন করেন দেবী শুনি হরির কথা । পেঁচকে মর্ত্যে আইলেন জগতমাতা ।।
অবন্তী নামক নগরী পাশে এক বন । তথা আসি মা কমলা উপস্থিত হন ।।
হেথায় ছিল ব্যবসায়ী ধনেশ্বর রায় । অগাধ ধন, চৌদ্দ কূল বসি খায় ।।
পত্নী সুমতি ছিল সাত কুমার । সংসার ছিল তার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ।।
যথাকালে ধনেশ্বর করিল গমন । বিধবা হইল পত্নী- ভাগ্যের লিখন ।।
সর্বদা কলহ করে সপ্ত বধূ গণ । মারমার কাটকাট হইত সর্বক্ষণ ।।
সংসার রচিল যে যার মতো যার । সুখের পরিবার হইল ছারখার ।।
এই দুঃখে ধনেশ্বর পত্নী ভীষণ শোকে । বনে গমন করিল জীবন ত্যাজিতে ।।
সেই বনে বৃদ্ধা বসি করে হায় হায় । এই বুঝি লেখা ছিল বিধাতার খাতায় ।।
এই দেখি হরিপ্রিয়া বৃদ্ধা রূপ ধরে । ছদ্মবেশে দেখা দিলেন ধনেশ্বর ভার্যারে ।।
দেবী কহেন কে তুমি দেহ পরিচয় । কোথা হতে আসিলে বলোহ আমায় ।।
স্থান বড় ভয়ানক নির্জন বন । হেথা হোথা নানা জন্তু করে বিচরণ । বুড়ি বলে মাগো পোড়া কপাল আমার । ভয় আমি করি না আর মরিবার ।।
এত বলি বৃদ্ধা সব কথা কন । শুনিয়া দুঃখিত হইল কমলার মন ।।
বৃদ্ধা প্রতি বিষ্ণুপ্রিয়া কহেন বচন । আত্মহত্যা মহাপাপ শাস্ত্রের লিখন ।।
যাও তুমি গৃহে ফিরি করো লক্ষ্মী ব্রত । অবশ্যই আসিবে সুখ পূর্বের মতো ।।
গুরুবারে সন্ধ্যাকালে মিলি এয়োগন । ব্রতের সকল কিছু করিবে আয়োজন ।।
আসন পাতি তাহে লক্ষ্মী মূর্তি বসাইবে । আম্র পল্লব, গোটা ফলে ঘট সাজিবে ।।
বিবিধ পুস্প, বিল্বপত্র নৈবেদ্য সকল । দিবে কলা, শর্করা আতপ তণ্ডুল ।।
একটি করে মুদ্রা রাখিবে লক্ষ্মী ঘটে । একমুষ্টি তণ্ডুল জমাইবে লক্ষ্মী ভাঁড়ে ।।
আম্র পল্লবে করিবে সিঁদুর তৈলে গোলা। চাল বাটি লক্ষ্মী সম্মুখে দিবে আলিপনা ।।
ধূপ দীপ জ্বালি সম্মুখে রাখিবে । আসন পাতি লক্ষ্মী পূজায় বসিবে ।।
একমনে পূজা দিবে লক্ষ্মী নারায়ণ । পূজাশেষে ব্রত কথা করিবে পঠন ।।
না করিয়ো পূজায় ঘণ্টা বাদন । পূজান্তে উলু দিবে মিলি এয়োগন ।।
এই ভাবে যেই জন লক্ষ্মী ব্রত করে । কোন দুঃখ তার আর নাহি রহিবে ।।
শুনিয়া বৃদ্ধা কহিল আনন্দিত মনে । কে মা তুমি কহো পরিচয় দানে ।।
এই শুনি লক্ষ্মী দেবী স্ব মূর্তি ধরে । ভক্তি চিত্তে বৃদ্ধা কাঁদে ভূমি ওপর পড়ে ।।
লক্ষ্মী বলে যাহ তুমি নিজের ভবন । গুরুবারে আমাকে পূজিবে নিয়ম মতোন ।।
এত বলি বিদায় লইল সাগর নন্দিনী ( মা লক্ষ্মী সাগর রাজার কন্যা ) । ঘরে ফিরি আসিল ধনেশ্বর পত্নী ।। বধূ গনে কহিল লক্ষ্মীর ব্রতের কথন । গুরুবারে লক্ষ্মী ভজে সপ্ত বধূ গণ ।।
ধীরে ধীরে হইল সুখের ভবন । যেমন আছিল ঘর পূর্বের মতোন ।।
সপ্ত ভাই মিলে মিশে কলহ বিসর্জন । সংসার হইল যেন স্বর্গের দেবভবন ।।
এই দেখি এক রমণী পূজা মানত করে । স্বামী চিররোগী, উপার্জন হীন সংসারে ।।
ভক্তি ভরে সেই নারী লক্ষ্মী দেবী ভজে । হরিপ্রিয়ার কৃপায় তাহার দুঃখ সকল ঘোচে ।।
রোগ ছাড়ি তার স্বামী সুস্থ হইল। এই ভাবে সকল দুঃখ তার ঘুচিল ।।
আনন্দে দিনে জন্মিল তাঁহাদের সুন্দর নন্দন । লক্ষ্মীর কৃপায় তার বাড়িল ধন জন ।।
এই ভাবে লক্ষ্মী ব্রত ছড়ায় দেশ দেশান্তরে । সকলে শুনি লক্ষ্মী দেবীর পূজা করে ।।
লক্ষ্মী কৃপায় সকলের দুঃখ চলি যায় । কমলার কৃপা সকলের ওপর বর্ষায় ।।
একদিন লক্ষ্মী পূজা করে বামাগন । আসিল এক বণিক তাঁহাদের সদন ।।
বণিক কহে কোন দেবী কি পরিচয় । করিলে পূজা দেবীর, কি ফল হয় ।।
বামারা বলে ইনি লক্ষ্মী দেবী জগত জননী । লক্ষ্মী কৃপায় সুখে রহে ব্রতিনী ।।
গুরুবারে যেই জন লক্ষ্মী পূজা করে । অবশ্যই থাকিবে সুখে কমলার বরে ।।
এই বাক্য শুনে হাসে বণিক মহাশয় । মানিনা এই সত্য তব কথায় ।।
কপালে যদি না থাকে ধনের লিখন । কীরূপে দিবে লক্ষ্মী বর- ধন- জন ।।
শুধু শুধু লক্ষ্মী পূজা করি কী হয় । বৃথা কাটাইতেছ কমলা পূজায় ।।
গর্বে ভরা বাক্য লক্ষ্মী সইতে নারে । ধীরে ধীরে মা কমলা ছাড়িল তাহারে ।।
ঝড় উঠি তার নৌকা জলে ডোবে । ধন জন আদি গেল নানা রোগে ভোগে ।।
মড়কে রোগে তার গৃহ হইল ছারখার । ভিখারি হইয়া বণিক ঘোরে দ্বারে দ্বার ।।
এককালে সে থাকিত রাজার হালে । আজ সে ভিখারী, পথে কষ্টে চলে ।।
এই ভাবে বহু দেশ ঘোরে সদাগর । একদিন আইলো সে অবন্তী নগর ।।
সেই স্থানে ব্রত করে যতেক বামাগনে । বসি তারা মন দেয় লক্ষ্মীর ভজনে ।।
এই দেখি পূর্ব কথা হইল স্মরণ । এই স্থানে দেবীরে করিছে অবমানন ।।
সেই পাপে সব ধ্বংস হইলো তার । ভূমিতে লোটাইয়ে সদাগর কান্দে বারবার ।।
এই স্থানে করেছি মাগো বহু অহঙ্কার । সেই পাপে সব কিছু হইল ছারখার ।।
ধন গর্বে মত্ত হয়ে করিনু অবহেলা । সেই অপরাধে মা তুমি মোরে ত্যাজিলা ।।
ক্ষুধার জ্বালায় মাগো ঘুরি দেশ দেশান্তরে । ধন- জন- আত্মীয় গেলা আমাকে ছেড়ে ।।
তুমি মাতা দয়াময়ী বিষ্ণু বক্ষ বিলাসিনী । তুমি মাতা ভগবতী জগত পালিনী ।।
তুমি যারে রক্ষা করো কিসে তার ভয় । তুমি যারে ত্যাজি যাও, সে সব হারায় ।।
তুমি যারে কৃপা কর, সেই ধন্য হয় । তোমার আশিসে মাগো সর্ব সিদ্ধি হয় ।।
এই ভাবে সদাগর লক্ষ্মী স্তব করে । কমলার কৃপা দৃষ্টি বণিকের উপর পড়ে ।।
লক্ষ্মীর কৃপায় বণিক সব ফিরি পায় । গৃহে ফিরি মন দেয় লক্ষ্মীর পূজায় ।।
লক্ষ্মীর কৃপায় তাহার ধন জন বাড়ে । এই ভাবে ব্রত প্রচার হয় দেশ দেশান্তরে ।I
এই ভাবে সকলে লক্ষ্মী পূজা করে । ধনে জনে বাড়িল কমলার বরে ।।
খাদ্য ধন জন বাড়িল লক্ষ্মীর কৃপায় । হরি হরি বল তুলিয়া হস্ত দ্বয় ।।
যেই জন ভক্তি ভরি লক্ষ্মী পূজিবে । অবশ্যই তাহার দুঃখ সকল ঘুচিবে ।।
যে পড়ে ব্রত কথা, আর যেবা করে শ্রবণ । অবশ্যই পাইবে সে মা লক্ষ্মীর চরণ ।।
ব্রত কথা শুনিবে অবশ্যই ভক্তি মনে । লক্ষ্মীর কৃপায় বাড়িবে ধনে জনে ।।
জয় জয় ব্রহ্মময়ী, মা নারায়ণী । তোমার কৃপায় শেষ করিনু গ্রন্থ খানি ।

মা লক্ষ্মীর প্রিয় খাবার কি?
দেবী লক্ষ্মী সাদা ও শুভ্র রঙের খাবার সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন। তার মধ্যে ক্ষীর হল তাঁর সবচেয়ে প্রিয় খাবার। দুধ ও কেশর দিয়ে তৈরী ক্ষীর লক্ষী দেবী বেশি পছন্দ করেন।

মা লক্ষ্মীর অপর নাম কি?
লক্ষী দেবীর একটি ওপর নাম আছে। কেও কেও তাকে তার ওপর নামেও ডেকে থাকেন। তার অপর নাম মহালক্ষ্মী ইনি স্বত্ত্ব গুন ময়ী।

শেষ কথাঃ আপনি যদি এই ধরনের আরো কন্টেন্ট চান তাহলে আমাদের আজকের এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন রেগুলার। আশা করি আপনি আমাদের ওয়েবসাইটের পোস্ট পড়ে উপকৃত হবেন

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন